Posts

Showing posts from August, 2020

চিন্তাভাবনার মৌলিকত্ব কতটুকু দরকার? -সোহায়েব বিন ইসলাম সিয়াম

 মৌলিক চিন্তা  -------------------- চিন্তাভাবনার মৌলিকত্ব দরকার। মৌলিক চিন্তাভাবনা করার মত লোক দিন দিন কমে যাচ্ছে।  দশজনের দশটা মত একত্রিত করে সেটাকে বিশ্লেষণ করে আপনি বড়জোর একজন বিশ্লেষক হতে পারেন। কিন্তু মৌলিক চিন্তার ব্যাপারটা সেখানে অনুপস্থিত থেকে যায়। একটা রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য মৌলিক চিন্তাবিদ দরকার হয়।  সম্পূর্ণ রূপে নিজের মৌলিক চিন্তাকে প্রকাশ করার জন্য দরকার সাহস ও বুদ্ধিমত্তা। ধরেন, বর্ণবাদ কিংবা নেপোটিজম নিয়ে আপনার দৃষ্টি ভঙ্গি কি? এখন এটা নিয়ে আপনি না ভেবেই যদি বিভিন্ন আর্টিকেল, বিভিন্ন মানুষের মতামত রিড করা শুরু করেন, আপনি নিজের অজান্তেই বায়াসড হয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে, মৌলিক চিন্তা করার অভ্যাস দূর হয়ে যায়। যেটা হতাশাজনক। দিনের বেশিরভাগ সময় ফেসবুকে থাকার জন্য, আমরা আমার ইচ্ছেমতো জ্ঞান টাকে আহরন করতে পারিনা। আমরা স্ক্রল করি, যা সামনে আসে, দেখি, আমাদের যা দেখানো হয়, আমরা তাই দেখি। কোনো বিষয়ে নিজের ভাবনা সময় নিয়ে চিন্তা করার আগেই সহস্র মতামত আমাদের সামনে চলে আসে। আমরা তখন সমর্থন দেই অথবা বিরোধীতা পোষণ করি।  এই 'সমর্থন' ও 'বিরোধীতা' পোষণও আপনার মৌলিক

রবীন্দ্র সাহিত্য কখনো অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেলে তখন তাকে বাংলা সাহিত্যের সেরা স্রষ্টা বলবেন কি? - সোহায়েব বিন ইসলাম

 // রবীন্দ্র সাহিত্য কখনো অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেলে তখন তাকে বাংলা সাহিত্যের সেরা স্রষ্টা বলবেন কি?// শিল্প সাহিত্য -ই সম্ভবত একমাত্র বিষয়, সেখানে নিয়ম কানুনের বেড়া জাল কে নগন্য চোখে দেখা হয়। আপনি কখনোই কোনো শিল্পকে একটা নিয়মের মধ্যে আটকে ফেলতে পারবেন না। এজন্যই হয়তো এটা শিল্প। সাহিত্যের সৌন্দর্য হলো, এটাকে নিয়মের মধ্যে আটকে ফেলা যায় না, আবার এটাকে  সহজে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। যেমনটা, নজরুল কে কবি না বলে পদ্যকার বলে অভিহিত করেন কেউ কেউ। কবি সত্ত্বাকে এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করাও সাহিত্যের বাইরের কিছু না। আবার যেহেতু এখানে নিয়মে বেঁধে ফেলার কিছু নাই, সেহেতু এখানে শ্রেষ্ঠত্ব বলেও কিছু নেই। সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্বের চেয়ে 'প্রাসঙ্গিকতা' বা 'কালজয়ী' টার্মটা গুরুত্বপূর্ণ।  ' কালজয়ী'  টার্মটা অবশ্য একটা সীমাবদ্ধ টার্ম। রবীন্দ্রনাথ চলে যাওয়ার আশি বছর পরেও তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। বর্তমান সময়ে তিনি কালজয়ী। হয়তো আরো আশি বা একশ বছর পরেও তিনি প্রাসঙ্গিক থাকবেন। তারও একশ বছর পরে তিনি প্রাসঙ্গিক নাও থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে  তিনি সেই সময় বা কালকে জয় করতে পারবেন না।  যতদিন তিনি প্রাসঙ

ছুটির গল্প (ছোটো গল্প- সোহায়েব বিন ইসলাম সিয়াম)

 কাঁকনকে আমি সুন্দরী কাঁকন বলে ডাকতাম সব সময়।  অনেকদিন পর বিবাহিত কাঁকনকে দামী গহনা আর শাড়ি পরা অবস্থায় দেখে চোখ ঝলসে যাওয়ার মত অবস্থা আমার। এখন সুন্দরী বলে ডাকতে একটু সংকোচ বোধ হচ্ছে। কারো অধিকারের ব্যাপার স্যাপার আছে। বিবাহিত কাকন বলে কথা!  সুন্দরী  কাঁকনের ইচ্ছে ছিলো - উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলার শিপ নিয়ে বিদেশে চলে যাবে। স্কলারশিপ না পেলেও বড়লোক জামাইয়ের সাথে বিদেশে সেটল হওয়ার ব্যবস্থা চলছে তার। দিপু'র খুব শখ ছিলো ডাক্তারি পড়ার।  দিপু'র আশা পূরণ হয়েছে। আর  সাধনের ঠিক ঠিকানা ছিলো না।ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়াতো।সেই ভবঘুরে  সাধন সম্ভবত আজকের সবচে বড় চমক। দেশের সেরা বিশ জন বিজনেস আইকনের মধ্যে সে একটা। অনেক দিন পর আড্ডায় সবাইকে দেখে ভালো লাগছে।সবার স্বপ্ন পূরণ পূরণ হয়েছে।কেউ কেউ চাওয়ার চেয়ে বেশি পেয়েছে। মনে পড়ছে, সে দিনগুলোর কথা। দু বেলা খাবার,  বিকালে চা সিগারেট  আর কিছু স্বপ্ন খেয়ে রোজ জীবনধারণ করতাম আমরা।প্রায় আড্ডায় নিজেদের স্বপ্ন গুলো নিয়ে আলোচনা করতাম। আর কাঁকনের গান তো থাকতোই! ওহ আচ্ছা ,  আমার কথা তো আপনাদের বলা হয়নি এখনও।আমি হতে চেয়েছিলাম কবি। শব্দের সাথে খেলা করার মোহে মোহাবিষ্ট

প্রসঙ্গ -মারজুক রাসেল ও তার বই 'দেহবন্টন বিষয়ক দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর "

"কবিতা যারে খায়, প্লেট -সুদ্ধা খায়" কিংবা,  "কবিতা পৃথিবীর সমস্ত কিছুকে গ্রাস করে" - মারজুক রাসেল   কবিতা কি? উইকিপিডিয়া ঘাটলে পাওয়া যায়, "কবিতা, কাব্য বা পদ্য হচ্ছে শব্দ প্রয়োগের ছান্দসিক কিংবা অনিবার্য ভাবার্থের বাক্য বিন্যাস--- যা একজন কবির আবেগ-অনুভূতি, উপলব্ধি ও চিন্তা করার সংক্ষিপ্ত রুপ এবং তা অতি অবশ্যই উপমা-উৎপ্রেক্ষা-চিত্রকল্পের সাহায্যে আন্দোলিত সৃষ্টির উদাহরণ।" সংজ্ঞায় কোথাও নেই -কবিতা দুর্বল। কবিতা করুণা'র।কবিতা চাঁদের আলোর মত স্নিগ্ধ।অথচ, বেশির ভাগ মানুষ কবিতা'কে নিয়ে এরকম ভ্রান্ত ধারণা করেন। কবিতা সূর্যের মত কঠোর হতে পারে, সেটা মারজুকের এ দুটো বাক্য থেকে বোঝা যায় ভালো ভাবেই। আমরা যারা মারজুকের খ্যাতি নিয়ে প্রশ্ন করি,জোর করে তথাকথিত ইউটিউবারদের মত মৌসুমি বাংলিশ বই বের করা সেলিব্রেটিদের কাতারে ফেলে দেই, তাদের জানা উচিত, এরকম বাক্য ভেতর থেকে আসতে হলে কবিসত্তার ভিত্তি শক্ত  হতে হয়।মারজুক রাসেল একটা ভিত্তি তৈরি করে এ পর্যায়ে এসেছেন।এটা রাতারাতি হয়নি।কবিতা'কে নিয়ে বসবাস, কবিতাকে নিয়ে জীবন কাটানো, স্বপ্ন দেখা, কবিতার জন্য নিজেকে বারবার

নির্বাসন (ছোটোগল্প, লেখা : সোহায়েব বিন ইসলাম সিয়াম)

 মেয়েটি গুটি গুটি পায়ে মাথায় ওড়না দিয়ে দ্রুত চলে যাচ্ছে। হাতে  বাজারের ব্যাগ। সিগারেট ধরিয়ে এই দৃশ্য দেখা আমার দৈনন্দিন জীবনের একটি  অংশ। প্রতিদিনকার রুটিনমত সকাল ১১ টার পরে আমি বারান্দায় এসে দাঁড়াই।স্ক্যাচার টা গ্রিলে হেলান দিয়ে রেখে গ্রিল ধরে দাড়িয়ে থাকি। একটা সিগারেট ধরাই। ধোঁয়া উড়িয়ে মেয়েটার হেঁটে যাওয়া দেখি।তিনতলার বারান্দা থেকে ওর মুখ দেখা যায় না ।কল্পনায় একটি মুখ এঁকে নেই। তারপর বারান্দায় রাখা প্লাস্টিকের চেয়ার টাতে বসি কিছুক্ষণ। আমার ক্ষুদ্র পরিসরের জীবনে এটা বড়সড় ঘটনা। আমার দৌড় আক্ষরিক অর্থেই এই বারান্দা পর্যন্ত।দৌড় বলতেও সংকোচ হয় কারণ, আমি দৌঁড়াতে পারিনা।আমার এক পা নেই।তথাকথিত পঙ্গু  আমি।  তেমন কোনো কাজ করিনা।টুকটাক লেখালিখি করি।বই টই বেরোয়। কবি হিসেবে হালকা পাতলা  নামডাক আছে বলা যায়।ম্যাগাজিনের জন্য  লেখা নেয়ার জন্য সম্পাদক আসে । লেখালিখির সামান্য আয়ে আমি একলা মানুষ দিব্যি বেঁচে আছি।তিনতলার একটা রুম ভাড়া নিয়ে একটা পরিবারের সাথে সাবলেট থাকি। বুয়া এসে একবেলা সব রান্না করে দিয়ে যায়। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে আমি আমার পৃথিবী থেকে অন্য পৃথিবীতে যাই না। বলা যায়, বিল্ডিং এর একটা রুমে

বাংলাদেশের নাটক শিল্পের বর্তমান অবস্থা ও আমার দৃষ্টিভঙ্গি

 বাংলাদেশের নাটকের কথা উঠলে প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে মানুষকে আমি কয়েকশ্রেণীতে ভাগ করি। এক শ্রেণী কিছুটা হতাশ হয়ে নাটকে দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। পুরাতন দিনের বিশেষত ৯০ দশকের কাজগুলোর সাথে বর্তমান সময়ের কাজগুলোর তুলনা করে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। আরেক শ্রেণী আছেন, যারা আশা বাদী। নাটকে বেশ কিছু ভালো কাজ হচ্ছে, যেগুলো তারা তুলে ধরার চেষ্টা করেন। আরেক শ্রেণী আছে - যারা সবচে গুরুত্বপূর্ণ,  তারা বাংলাদেশের নাটক দেখেন না। এ প্রসঙ্গ উঠলেই বলেন, এসব দেখে সময় নষ্ট করিনা। তখন তাদের কে প্রশ্ন করি, সময় কিভাবে কাটান? তারা বলেন যে, ইংরেজি ও হিন্দী সিনেমা, সিরিজে তারা মগ্ন থাকতে ভালোবাসেন। এখন আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, তাহলে আমি বলবো, আমি এদের কোনো শ্রেণীতেই পড়িনা। আমি বিশ্লেষণধর্মী মনোভাব নিয়ে নাটক অবস্থা'র কথা তুলে ধরলে, সেখানে একই সাথে আমার হতাশা ও নৈরাশ্যের ব্যাপার উঠে আসবে। আমাদের তরুন সমাজ বর্তমানে যারা কলেজ বা ভার্সিটিতে পড়ছে,  তাদের বেশির ভাগের মাঝে ইদানিং  "ব্যাচেলর পয়েন্ট "  নামক ধারাবাহিক নাটকটি সাড়া ফেলেছে। এটা কি ভালো দিক না খারাপ দিক? ব্যাচেলর পয়েন্ট তরুন দর্শক প্রিয়তা পাওয়ার মূল কারণ হ